“ন কর্মণামনারম্ভান্নৈধর্ম্যং পুরুষো২শ্নুতে।
ন চ সন্ন্যসনাদের সিদ্ধিং সমধিগচ্ছতি।।”
কে কাকে বলেছেন ? তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
অথবা
প্রকৃতির নিয়মে সব জীব কর্ম করতে বাধ্য - কর্ম বন্ধনের অধীন হলে মুক্তি কিভাবে সম্ভব ? তা বুঝিয়ে দাও।
এবং
“নিয়তং কুরু কর্ম ত্বং কর্ম জ্যায়ো হ্যকর্মণঃ।
শরীরযাত্রাপি চ তে ন প্রসিধ্যেদকর্মণঃ।।”
তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
অথবা
"কর্ম না করার থেকে কর্ম করা-ই শ্রেষ্ঠ" - পাঠ্যাংশ অনুসারে বুঝিয়ে দাও।
দ্বাদশ শ্রেণী এর (WBCHSE Class 12) এর সংস্কৃত বিষয়ে মহর্ষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস রচিত মহাভারতের ভীষ্ম পর্বের অন্তর্গত শ্রীমদ্ভাগবত গীতা তৃতীয় অধ্যায় "কর্মযোগ" "Karmayoga" এর যে বিষয় গুলি এখানে আলোচনা করা হয়েছে সেগুলি হল -
উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় সংস্কৃত বিষয়ে "শ্রীমদ্ভাগবত গীতা" থেকে
নেওয়া "কর্মযোগ" এর প্রশ্ন উত্তর গুলি পরীক্ষায় ১০০% কমন পাবে। "Karm
Yoga" question answers taken from "Shrimad Bhagabat Gita" on
Sanskrit subject in higher secondary (Class 12) examination will get 100%
common in the examination.
কর্মযোগ সম্পর্কিত তথ্যঃ
| পাঠ্যের নাম | কর্মযোগঃ |
| উৎস | মহাভারতের ভীষ্মপর্ব |
| মূল গ্রন্থ | শ্রীমদ্ভাগবত গীতা |
| অধ্যায় | তৃতীয় |
| রচয়িতা | মহর্ষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস |
সংস্কৃত শিক্ষক কর্তৃক কুড়ি বছরের শিক্ষকতা করার অভিজ্ঞতা প্রসূত এই নোটস গুলি সংস্কৃত বিষয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ১০০% নম্বর পাওয়ার যোগ্য করে রচিত। Class 12 এর বহু ছাত্র-ছাত্রী এই নোটস্ লিখে পরীক্ষায় ৯০% থেকে ১০০% নম্বর পেয়েছে।
এই নোটস্ গুলির বৈশিষ্ট্যঃ
| ক্রমিক সংখ্যা | নোটস্ গুলির বৈশিষ্ট্য |
|---|---|
| ১। | সহজ সরল ভাষায় লেখা। |
| ২। | নোটসের মধ্যে অযথা পাণ্ডিত্য প্রকাশ করা হয়নি। |
| ৩। | ভাষা ও শব্দের পরিমিত প্রয়োগ করা হয়েছে। |
| ৪। | যেখানে প্রয়োজন কেবলমাত্র সেখানেই যথাযথ উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। |
| ৫। | উত্তর গুলির আকার অযথা বড় বা ছোট করা হয়নি। |
| ৬। | উত্তর গুলি পরীক্ষকদের রুচিসম্মত ভাবে ছোট ছোট অংশে লেখা হয়েছে। |
| ৭। | পরীক্ষায় যথাযথ ভাবে উত্তর গুলি লিখলে ৯০% থেকে ১০০% নম্বর অবশ্যই পাবে। |
প্রশ্নঃ – ৫
“ন কর্মণামনারম্ভান্নৈধর্ম্যং পুরুষো২শ্নুতে।
ন চ সন্ন্যসনাদের সিদ্ধিং সমধিগচ্ছতি।।”
কে কাকে বলেছেন ? তাৎপর্য
ব্যাখ্যা কর।
অথবা
প্রকৃতির নিয়মে সব জীব কর্ম করতে বাধ্য - কর্ম বন্ধনের অধীন হলে মুক্তি কিভাবে সম্ভব ? তা বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ-
মহর্ষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস এর লোকোত্তর তপপ্রভাবে ভারতের চিরন্তন আত্মার
মহাজাগরণ ঘটেছে মহাভারত মহাকাব্যে। এই মহাকাব্যের অন্তর্গত ভীষ্ম পর্বে বর্ণিত
ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত অমৃত বাণী স্বরূপ শ্রীমদ্ভাগবত গীতার কর্মযোগ নামক
তৃতীয় অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কর্মবীর অর্জুনকে কর্মের প্রকৃত স্বরূপ বর্ণনা
প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি বলেছেন।
আমাদের পাঠ্যের প্রথমেই শ্রীকৃষ্ণ বলেছেন যে, সংসারে দুই রকম পরমসিদ্ধি বা মুক্তি আছে। সাংখ্য দার্শনিকগণ
বলেছেন যে, জ্ঞানযোগ
এর দ্বারা মুক্তি লাভ করা যায়। আর নিষ্কাম কর্মযোগীগণ বলেছেন মুক্তি লাভ করা যায়
কর্মের মাধ্যমে। জ্ঞানমার্গীদের মতে কর্ম মাত্রই বন্ধন। কিন্তু গীতায় বলা হয়েছে
কর্ম বন্ধনের কারণ নয়। মানুষ কামনা ত্যাগ করে বন্ধনহীন নিষ্কাম কর্মের মাধ্যমেই
মোক্ষ লাভ করে থাকে। কর্মেন্দ্রিয়কে সংযত করে যারা জ্ঞানেন্দ্রিয়ের মাধ্যমে কর্ম
করে তারা মুঢ়চেতা বা মিথ্যাবাদী। তাই নিরাশক্ত হয়ে জ্ঞানেন্দ্রিয়কে সংযত করে
কর্ম করলে তার দ্বারা মোক্ষ প্রাপ্তি সম্ভব। তাই গীতায় বলা হয়েছে -
"আসক্ত বুদ্ধিঃ সর্বত্র জিতাত্মা বিগতস্পৃহঃ।
নৈষ্কর্ম্য সিদ্ধিঃ পরমাং সন্ন্যাসেন বিগচ্ছতি।।"
অর্থাৎ যার বুদ্ধি সব বিষয়ে অনাসক্ত, নিরহংকার ও নিষ্পৃহ তিনি সন্ন্যাস দ্বারা অর্থাৎ আসক্তি ও
কর্মফল ত্যাগ রূপ সন্ন্যাস দ্বারা নৈষ্কর্মসিদ্ধি লাভ করেন।
আবার বলা যায় যে কর্ম হলো জীবের জন্মগত প্রবৃত্তি কেউ কখনো ক্ষণকাল মাত্রও
কর্ম না করে থাকতে পারে না। জ্ঞানী, অজ্ঞানী, সকলেই প্রকৃতির দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কর্ম করে থাকে। প্রবৃত্তি বা নিবৃত্তি যে
কোন অবস্থাতেই মানুষকে কর্ম করতে হয়। প্রকৃতি কখনো নিষ্ক্রিয় থাকে না।
প্রকৃতির গুণ হলো তিনটি সত্ত্ব, রজঃ ও তমঃ। এই গুণ ত্রয়ের দ্বারাই রাগ, ঘৃণা, হিংসা প্রভৃতির উৎপত্তি হয়। গুণ থেকে বৃত্তি ও বৃত্তি থেকে মানুষের স্বভাব
তৈরি হয়। সত্ত্ব হল ত্যাগ প্রধান গুণ। নির্লভতা অপমানিত্ত, সত্য, সরলতা প্রভৃতি এর প্রধান বৈশিষ্ট্য। রাজসিক গুণের দ্বারাই ব্যক্তির সুখ ও
প্রভুত্ব লাভের ইচ্ছা জাগ্রত হয়। আবার তামসিক গুণ হলো আলস্য, নিদ্রা, মূর্খতা, হিংসা
প্রভৃতি খারাপ দোষের উৎপত্তির কারণ। এই বিষয়ে ভগবান শংকরাচার্য বলেছেন -
"সত্ত্বরজস্তমসাং গুনানাং সাম্যাবস্থা প্রকৃতিঃ।
তস্যাঃ গুনৈঃ বিকারৈঃ প্রকৃতি কার্য্যৈঃ ইন্দ্রিয়ৈঃ।।"
অর্থাৎ এই গুণ ত্রয়ের সাম্যাবস্থা হল প্রকৃতি। প্রকৃতির গুণ হল প্রকৃতির
পরিবর্তনের প্রভাব। যদিও প্রকৃতির পরবশতাকে কোথাও কালের স্বভাবের আবার কোথাও
কর্মের পরবশতা রূপে উল্লেখ করা হয়েছে। সবকিছুর মূলে প্রকৃতি জনিত পদার্থের
পরবশতাই প্রধান। যা সর্বদা পরিবর্তনশীল।
সুতরাং গীতায় বলা হয়েছে যে, নিরন্তর কর্ম করো। কিন্তু তাতে আসক্ত হয়ো না। অনাসক্তিই হল পূর্ণ আত্মত্যাগ।
অনাসক্ত ভাবে ঈশ্বর ভক্তির মাধ্যমে কর্ম করাই হলো কর্মযোগ। আর কর্মযোগের মাধ্যমে
কর্ম করে বন্ধন থেকে মুক্ত হওয়া সম্ভব।
প্রশ্নঃ – ৬
“নিয়তং কুরু কর্ম ত্বং কর্ম জ্যায়ো হ্যকর্মণঃ।
শরীরযাত্রাপি চ তে ন প্রসিধ্যেদকর্মণঃ।।”
তাৎপর্য ব্যাখ্যা কর।
অথবা
"কর্ম না করার থেকে কর্ম করা-ই শ্রেষ্ঠ" - পাঠ্যাংশ অনুসারে বুঝিয়ে দাও।
উত্তরঃ-
মহর্ষি কৃষ্ণ দ্বৈপায়ন বেদব্যাস এর লোকোত্তর তপপ্রভাবে ভারতের চিরন্তন আত্মার মহাজাগরণ ঘটেছে মহাভারত মহাকাব্যে। এই মহাকাব্যের অন্তর্গত ভীষ্ম পর্বে বর্ণিত ভগবান শ্রীকৃষ্ণের মুখনিঃসৃত অমৃত বাণী স্বরূপ শ্রীমদ্ভাগবত গীতার কর্মযোগ নামক তৃতীয় অধ্যায়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কর্মবীর অর্জুনকে কর্মের প্রকৃত স্বরূপ বর্ণনা প্রসঙ্গে আলোচ্য উক্তিটি বলেছেন।
কর্মময় সংসারে প্রত্যেককে সর্বদা কর্ম করতে হয় কর্ম ছাড়া কোন জীব মুহুর্তের
জন্যও বেঁচে থাকতে পারে না। জীব প্রকৃতিজো গুণের প্রভাবে যে কর্ম করে তা দুই
প্রকারের হতে পারে। যথা শাস্ত্র বিহিত কর্ম এবং নিয়ত কর্ম।
শাস্ত্র বিহিত কর্মঃ-
শাস্ত্র বিহিত কর্ম বলতে বিভিন্ন শাস্ত্রে বর্ণিত যজ্ঞ, দান, তপস্যা, ব্রত, উপবাস, উপাসনা প্রভৃতি শুভ কর্ম। এই সমস্ত শুভ কর্ম কোন একজনের পক্ষে করা সম্ভব নয়। তাই বলা যায় নিষিদ্ধ কর্ম যেমন - হিংসা, দ্বেষ, চুরি, মিথ্যা কথা বলা প্রভৃতি অশুভ কর্ম না করলে স্বাভাবিক ভাবেই শাস্ত্র বিহিত কর্ম হয়ে যায়।
নিয়ত কর্মঃ-
প্রকৃতপক্ষে মনের দ্বারা ইন্দ্রিয় গুলি সংযত করে নিষ্কাম ভাবে কর্ম করাকেই নিয়ত কর্ম বলে। তবে পন্ডিতগণ নিয়ত কর্ম শব্দের নানা প্রকার অর্থ করেছেন। শঙ্করাচার্যের মতে সর্বদা নিত্য-শাস্ত্র উপদিষ্ট কর্ম হলো নিয়ত কর্ম। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুন তথা জীব-মাত্রকেই সর্বদা কর্ম করতে বলেছেন। কেননা কর্ম না করে বসে থাকার থেকে কর্ম করা শ্রেয়। প্রাচীন টিকাকারগণ শাস্ত্রে বর্ণিত নিত্যকর্ম, শ্রৌত তথা স্মার্ত কর্ম কে নিয়ত কর্ম বলেছেন। কর্মযোগের দৃষ্টিতে বর্ণ ও ধর্ম এর অনুকূলে যে শাস্ত্র বিহিত কর্তব্য-কর্ম প্রাপ্ত হওয়া যায় তা নিষ্ঠুর বা সৌম্য যাই হোক না কেন, সেগুলি নিয়তকর্ম।
বেদান্ত দর্শনে বলা হয়েছে নিত্যকর্ম হলো সন্ধ্যা, উপাসনা ইত্যাদি ।এ ছাড়া নৈমিত্তিক কর্ম হল শ্রাদ্ধ
প্রভৃতি। তবে এখানে কর্ম বলতে বিভিন্ন শাস্ত্রে বর্ণিত কর্ম এবং নিয়ত বা নিত্য বা
নৈমিত্তিক কর্ম কেই বোঝায়নি বরং সব কর্মকেই বোঝানো হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে সধর্ম
পালন করাই হলো সমস্ত কর্মের মূল মন্ত্র। কিন্তু স্বধর্ম পালন করতে গিয়ে যদি তার
সঙ্গে অন্যায় যুক্ত হয়, তবে তা
নিয়ত কর্ম নয়।
অর্জুন ক্ষত্রিয় হিসেবে ধর্মের রক্ষা ও অধর্মের নিধনকল্পে যুদ্ধ রূপ নিষ্ঠুর
কর্ম করলেও তা লোক কল্যাণবশত অর্জুনের স্বধর্ম অর্থাৎ নিয়ত কর্ম। আবার ধৈর্য ধারণ, অন্যায় ভাবে রাজ্য ছিনিয়ে নেওয়া প্রভৃতির জন্য যে যুদ্ধ
করছে তা নিয়ত কর্ম নয়। তাই কর্ম ত্যাগ অপেক্ষা সধর্ম তথা নিয়ত কর্ম করা উচিত।
সর্বোপরি বলা যায় যে, কর্মের
দ্বারাই কর্মের বন্ধন ছেদ করা উচিত। কামনা বাসনা ফলাশক্তিময় এই জীবন একটি গতিময়
যাত্রা। যার দ্বারা অমৃতত্ত্বের দিকে চলেছি। আবার এর প্রধান বাহন হল আমাদের শরীর।
যদি নিষ্কাম ভাবে কর্ম না করে, তাহলে সেই শরীর যাত্রাও চলে না। তাই কামনা ত্যাগ করে কর্মহীন না হয়ে কর্মের
মাধ্যমেই পরমাত্মার সাথে যুক্ত হতে হয়।

No comments:
Post a Comment