প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞান সাহিত্য চর্চায় আর্যভট্টের অবদান আলোচনা কর।
অথবা
প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চায় আর্যভট্টের অবদান আলোচনা কর।
এবং
সংস্কৃত সাহিত্যের একটি ভক্তিমূলক গীতিকাব্যের নমুনা রূপে গীতগোবিন্দম্ এর মূল্যায়ন কর।
Aryabhata : prachin itihas, Sanskrit Sahityer Itihas, Gita Govindam of Jayadeva, জ্যোতির্বিজ্ঞান ও ভক্তি মূলক গীতিকাব্য, আর্যভট্ট - Adhunik Itihas, জয়দেব ও গীতগোবিন্দ, গীতিকাব্য, সংস্কৃত গীতিকাব্য, ভক্তিমূলক গীতিকাব্য, Giti-Kabya. গীতগোবিন্দম্, History of Sanskrit Literature.
(toc) #title=( সূচিপত্র)
সংস্কৃত শিক্ষক কর্তৃক কুড়ি বছরের শিক্ষকতা করার অভিজ্ঞতা প্রসূত এই নোটস
গুলি সংস্কৃত বিষয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের ১০০% নম্বর পাওয়ার যোগ্য করে রচিত। Class
12 এর বহু ছাত্র-ছাত্রী এই নোটস্ লিখে
পরীক্ষায় ৯০% থেকে ১০০% নম্বর পেয়েছে।
পাঠ্য সম্পর্কিত তথ্যঃ
| পাঠ্যের নাম | সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস |
| উৎস | প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞান সাহিত্য ও গীতিকাব্য |
| মূল গ্রন্থ | আর্যভট্টের রচনাবলী ও গীতগোবিন্দম্ |
| গ্রন্থের শ্রেণী | জ্যোতির্বিজ্ঞান ও ভক্তি মূলক গীতিকাব্য |
| রচয়িতা | আর্যভট্ট ও জয়দেব |
উচ্চমাধ্যমিক সংস্কৃত প্রশ্ন ও উত্তর : সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস HS Sanskrit Question and Answer : নিচে দেওয়া হলো। এই দ্বাদশ শ্রেণীর সংস্কৃত প্রশ্ন ও উত্তর WBCHSE Class 12 Sanskrit Question and Answer, Suggestion, Notes, MCQ, Very Short, Short, Descriptive Question and Answer বহুবৈকল্পিক, সংক্ষিপ্ত, অতিসংক্ষিপ্ত এবং রচনাধর্মী প্রশ্ন উত্তর HS পরীক্ষার জন্য খুব ইম্পর্টেন্ট।
নোটস্ গুলির বৈশিষ্ট্যঃ
| ক্রমিক সংখ্যা | নোটস্ গুলির বৈশিষ্ট্য |
|---|---|
| ১। | সহজ সরল ভাষায় লেখা। |
| ২। | নোটসের মধ্যে অযথা পাণ্ডিত্য প্রকাশ করা হয়নি। |
| ৩। | ভাষা ও শব্দের পরিমিত প্রয়োগ করা হয়েছে। |
| ৪। | যেখানে প্রয়োজন কেবলমাত্র সেখানেই যথাযথ উদ্ধৃতি দেওয়া হয়েছে। |
| ৫। | উত্তর গুলির আকার অযথা বড় বা ছোট করা হয়নি। |
| ৬। | উত্তর গুলি পরীক্ষকদের রুচিসম্মত ভাবে ছোট ছোট পয়েন্ট করে লেখা হয়েছে। |
| ৭। | পরীক্ষায় যথাযথ ভাবে উত্তর গুলি লিখলে ৯০% থেকে ১০০% নম্বর অবশ্যই পাবে। |
প্রশ্নঃ- ১
প্রাচীন ভারতীয় বিজ্ঞান সাহিত্য চর্চায় আর্যভট্টের অবদান আলোচনা কর।
অথবা
প্রাচীন ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চায় আর্যভট্টের অবদান আলোচনা কর।
ভূমিকাঃ-
জ্যোতির্বিদ্যায় যে সমস্ত জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের অবদান বিশেষভাবে স্মরণীয়
তাদের মধ্যে একটি উজ্জ্বল নাম হল আর্যভট্ট। প্রকৃতপক্ষে তিনিই অর্থাৎ প্রথম আর্যভট্ট-ই
প্রাচীন ভারতীয় সিদ্ধান্ত জ্যোতির্বিদ্যার প্রকৃত প্রতিষ্ঠাতা।
আর্যভট্টের জীবনীঃ-
আল বিরুনীর বিবরণ থেকে জানা যায় যে, আর্যভট্ট গুপ্ত যুগে 476 খ্রিস্টাব্দে পার্টনার কাছে কুসুমপুর নামক স্থানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি বাল্য কালে অতি কষ্ট সহ্য করে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশুনা করেন। তিনি বিদ্যাভ্যাস শুরু করার পর খুব কম সময়ের মধ্যেই জ্যোতির্বিজ্ঞানে স্ব-প্রতিভার বহু নিদর্শন রাখেন। তার গবেষণালব্ধ বহু আবিষ্কার সামাজিক কারণে প্রকাশিত না হলেও গুপ্তরাজ বুদ্ধগুপ্তের উৎসাহে এবং রাজকীয় ব্যবস্থাপনায় জনসম্মুখে ৪৯৯ খ্রিস্টাব্দে তার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করার সুযোগ পান এবং তার বিখ্যাত গ্রন্থ আর্যসিদ্ধান্ত রচনা শুরু করেন।
গ্রন্থাবলঃ-
আর্যভট্ট তিনটি জ্যোতিষ শাস্ত্রের প্রণেতা এগুলি হল-
১। আর্যভট্টীয়,
২। আর্যাষ্টশতক ও
৩। দশগীতিকা সূত্র।
১। আর্যভট্টীয়ঃ-
এই গ্রন্থেই আর্যভট্ট সর্বপ্রথম আবিষ্কার করেন যে পৃথিবী সূর্যের চারিদিকে
ঘোরে। চন্দ্রগ্রহণ ও সূর্যগ্রহণের প্রকৃত তথ্য এবং গণিতশাস্ত্রের বিভিন্ন সূত্র এই
গ্রন্থে বর্ণিত হয়েছে।
২। আর্যাষ্টশতকঃ-
এই গ্রন্থটি তিনটি পরিচ্ছেদে বিভক্ত। যথা – ১। গণিতপাদ, ২। কালক্রিয়াপাদ ও ৩। গোলপাদ। এই গ্রন্থে পাটিগণিতের সূত্র, বর্ষ বিভাগ, এবং জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিভিন্ন তথ্য ও তত্ত্ব বর্ণিত
হয়েছে।
৩। দশগীতিকা সূত্রঃ-
এই গ্রন্থে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ, গ্রহণক্ষত্রের আবর্তন ও তাদের গতিপথ আদি আলোচিত হয়েছে।
বৈশিষ্ট্যঃ-
বৈদিক বেদঙ্গ জ্যোতিষ শাস্ত্রকে আর্যভট্ট নতুন নতুন পর্যবেক্ষণ ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের মাধ্যমে সমৃদ্ধশালী যেমন করেছিলেন তেমনি জ্যোতিষশাস্ত্রকে এক নির্দিষ্ট পদ্ধতি ও গতিপথ নির্দেশ করেছিলেন। তিনিই প্রথম কলিযুগের আরম্ভ কাল, সূর্য অন্যান্য গ্রহের আবর্ত, পরিবৃত্ত ও উৎকেন্দ্রিক বৃত্তের সাহায্যে গতির ব্যাখ্যা প্রভৃতি পর্যালোচনা করেন। তিনিই প্রথম জানান যে পৃথিবী গোল এবং সে নিজ কক্ষপথে আবর্তিত হয়। দিন রাত্রির প্রকৃত কারণ, সূর্য ও চন্দ্র গ্রহণের প্রকৃত ব্যাখ্যা প্রভৃতি তারই কৃতিত্ব। ভারতীয় গণিত শাস্ত্রের সঙ্গে বীজগণিতের পরিচয় তিনিই প্রথম করান।
মূল্যায়নঃ-
গুপ্ত যুগের নিউটন আর্যভট্ট পৃথিবীর আহ্নিক গতি, বার্ষিক গতি, অক্ষরের দ্বারা সংখ্যার প্রকাশ, বর্গমূল, ঘনমূল নির্ণয়, সমান্তর
শ্রেণীর যোগফল, বৃত্তের
পরিধির সঙ্গে ব্যাসের অনুপাত, ত্রিকোণমিতি, জ্যার্ধ
ও তার মান নির্ণয় প্রভৃতি আবিষ্কার করে চিরস্মরণীয় হয়ে রয়েছেন।
……………..O…………….
প্রশ্নঃ- ২
সংস্কৃত সাহিত্যের একটি ভক্তিমূলক গীতিকাব্যের নমুনা রূপে গীতগোবিন্দম্ এর মূল্যায়ন কর।
ভূমিকাঃ-
কবি জয়দেব রচিত দ্বাদশ সর্গ সমন্বিত মধুর কোমলকান্ত পদাবলী হলো গীতগোবিন্দম্ গীতিকাব্য। এতে কবি তাঁর ব্যক্তিগত অনুভূতির আলোকে হরিস্মরণের অনুভূতি – বিরহ – প্রতীক্ষা – মনস্তাপ - মিলন প্রভৃতি দিকগুলি ফুটে উঠেছে।কবি রাধা কৃষ্ণের শাশ্বত প্রেমলীলা কে উপজীব্য করে নিজের স্বতঃস্ফূর্ত হৃদয় আবেগকে যে গীতিময় কাব্যরূপ দান করেছেন, তা-ই হল গীতগোবিন্দম্ গীতকাব্য।
কবির জীবনীঃ-
গীতগোবিন্দের রচয়িতা কবি জয়দেব গোস্বামী অজয় নদীর তীরবর্তী বীরভূম জেলার
কেন্দুবিল্য গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম ভোজদেব, মাতা বামাদেবী, মতান্তরে রমাদেবী এবং পত্নী হলেন পদ্মাবতী। তিনি দ্বাদশ
শতকে গৌড়েশ্বর লক্ষণ সেনের সভাকবি ছিলেন।
বিষয়বস্তুঃ-
দ্বাদশ স্বর্গে রচিত গীতগোবিন্দের মূল বিষয়বস্তু হলো নায়ক শ্রীকৃষ্ণ এবং নায়িকা রাধার রাগ – অনুরাগ – মিলন - বিরহের বর্ণনা। প্রথম সর্গে রাধার শ্রীকৃষ্ণ বিরহের স্মৃতি ছায়া। দ্বিতীয় সর্গে উভয়ের বিরহ ব্যাকুলতা। তৃতীয় সর্গে শ্রীকৃষ্ণের রাধা – চিন্তা। চতুর্থ সর্গে কৃষ্ণের কাছে রাধার হৃদয়ের অবস্থা বর্ণনা। পঞ্চম সর্গে অভিসারিকা রাধার প্রতীক্ষা। ষষ্ঠ সর্গে রাধার সংকেত প্রেরণ। সপ্তম সর্গে শ্রীকৃষ্ণের অদর্শনে রাধার দুঃখ। অষ্টম সর্গে শ্রীরাধার মান।নবম সর্গে রাধার মানভঞ্জনে কৃষ্ণের ব্যাকুলতা। দশম সর্গে রাধার মানভঞ্জনে কৃষ্ণের অনুনয়। একাদশ সর্গে উভয়ের মিলন সম্ভাবনা এবং দ্বাদশ সর্গে উভয়ের মিলন বিলাস।
রচনা বৈশিষ্ট্য বা রচনা শৈলীঃ-
জয়দেবের কোমলকান্ত পদাবলীর পদলালিত্য লিপ্ত ও ললিত মাধুরী সত্যিই
হৃদয়গ্রাহী। এই প্রসঙ্গে কবি নিজেই বলেছেন-
"যদি হরি স্মরণে সরসং মনো
যদি বিলাস কলাসু কুতূহলাম্।
মধুর কোমলকান্ত পদাবলীং
শৃনু তদা জয়দেব সরস্বতীম্।।"
গীতগোবিন্দের বারোটি সর্গে মোট ২৪টি অষ্টাপদী গান আছে। যা মালব, গুর্জর প্রভৃতি তালে বিভক্ত। এর আশিটি শ্লোকের অধিকাংশই
অক্ষরবৃত্ত শার্দুলবিক্রীড়িত ছন্দে এবং গানগুলি মাত্রাবৃত্ত ছন্দে রচিত। তাই
পন্ডিত ম্যাকডোনেল সাহেব গীতগোবিন্দ কে “Lyrical Drama” বলেছেন।
মূল্যায়নঃ-
জনপ্রিয়তায় কালিদাসের মেঘদুত এর পরেই গীতগোবিন্দের স্থান এতে স্থান পেয়েছে ভক্তিমূলক প্রেম তত্ত্ব। দিব্য প্রেমলীলার পরম নায়ক সর্ব রমেশ্বর শ্রীকৃষ্ণ এবং শ্রীকৃষ্ণের লীলা নন্দিনী দিব্যশক্তিরূপিনী নায়িকা শ্রীরাধার অপার্থিব প্রেম-ই এর বিষয়বস্তু।গীতগোবিন্দের এই ভগবানের প্রতি ভক্তের ভক্তি রসের প্লাবনে মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্য থেকে শুরু করে অগণিত বৈষ্ণব ও সাধক প্লাবিত হয়েছেন। তবে গীতগোবিন্দম্ এর বহিঃ অঙ্গের প্রেমের দিকটিও উপেক্ষনীয় নয়।
উপসংহারঃ-
সর্বোপরি বলা যায় যে এটি শুধু মাত্র গীতিকাব্যই নয়, লোকসাহিত্য, রূপক কাব্য, এবং ধর্মশাস্ত্রও বটে। গীতগোবিন্দের মর্যাদা আজও অম্লান।
কবি সত্যেন্দ্রনাথ দত্ত "আমরা" কবিতায় বলেছেন-
"বাংলার রবি জয়দেব কবি কান্তকোমল পদে।
করেছে সুরভী সংস্কৃতের কাঞ্চন কোকনদে।।"
……………..O…………….
উচ্চমাধ্যমিক (Class 12) এর সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাসের সকল নোটস পেতে এখানে ক্লিক করুন।

No comments:
Post a Comment